Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the depicter domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/excelle3/blog.excellencebangladesh.com.bd/wp-includes/functions.php on line 6121

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the fluentform domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/excelle3/blog.excellencebangladesh.com.bd/wp-includes/functions.php on line 6121
রেনেসাঁ যুগে সাহিত্যের নবউত্থান ! - Blog • Excellence Bangladesh

রেনেসাঁ যুগে সাহিত্যের নবউত্থান !

রেনেসাঁ যুগে সাহিত্যের নবউত্থান !


পঞ্চদশ শতকের শেষ এবং ষোড়শ শতকের প্রথমার্ধ ছিল ইউরোপীয় সংস্কৃতির যুগসন্ধিক্ষণ।এই সময়ে ইউরোপীয় সাহিত্যিকরা একই সাথে ল্যাটিন ও মাতৃভাষা চর্চা করেন।তখন মূলত কাব্যই ছিল সাহিত্যের মূল রূপ।সে সময় রোমান মহাকাব্য ও চারণ কবিদের গাঁথা ছিল অন্যতম সাহিত্য নিদর্শন!


যুগের রদবদলের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প-সাহিত্যের রূপের ক্রমপরিবর্তন বরাবরই সাহিত্য বোদ্ধাদের গবেষণার বিষয় ছিল।একেক সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সাহিত্যের বিষয়,ধারা ও স্বরূপ অন্বেষণ করতে হলে ‘রেনেসাঁ’ যুগের কথা উল্লেখ করতেই হয়। রেনেসাঁ ছিল এক সাংস্কৃতিক আন্দোলন যা ইউরোপীয় বৌদ্ধিক জীবনেকে ব্যাপকভাবে আলোড়িত করেছিল।’নবজাগরণ’ এর এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ইউরোপীয় সাহিত্যে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে ‘মানবতাবাদী’ আন্দোলনের জোয়ার।শুরু হয় শিল্প সাহিত্যের নতুন এক যুগ।

রেনেসাঁর সাহিত্যকে বুঝতে হলে জানতে হবে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যের ধারাকে।প্রাচীন ও মধ্যযুগে সাহিত্যের মূল বিষয় ছিল দেব-দেবীর আখ্যান। ধর্মীয় লেখা ও ধর্ম বহির্ভূত কাজ সমূহ কাব্য আকারে লিপিবদ্ধ করাই ছিল সে যুগের সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য।কিন্তু পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় সভ্যতা মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে পদার্পন করার সময়ে ইতিহাসের প্রতিটি ক্ষেত্র আন্দোলিত হয় ‘রেনেসাঁ’ নামক নবধারার স্রোতে।রেনেসাঁর বৌদ্ধিক ভিত্তি ছিল রোমান ধারণা ‘হিউম্যানিটাস’ ও ধ্রুপদী গ্রীক দর্শনের পুনঃআবিষ্কার। রেনেসাঁ বা নবজাগরণের মুক্ত হাওয়া জীবনের যেদিকগুলিতে সর্বাধিক প্রভাব ফেলেছিল,তাদের মধ্যে উন্নত হলো সাহিত্য ও শিল্প।নবজাগরণের ফলে সাহিত্যের বিষয়ে আসে পরিবর্তন। রেনেসাঁ যুগে সাহিত্যের মূল উপজীব্য ছিল ‘মানবকেন্দ্রিকতা’। মানবতাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার গান গেয়ে রচিত হয় কাব্য।পূর্ব ধারণা অনুযায়ী গীর্জার নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে অন্ধ বিশ্বাসে না দেখা, না জানা বিষয়বস্তুকে পরিত্যাগ করে সাহিত্য ও শিল্পরস হয়ে প্রকৃত অর্থেই মানবজীবনমুখী।দেব-দেবী, স্বর্গ-মর্ত্য, পাপ পূণ্যের উর্ধ্বে গিয়ে মানুষের প্রেম-ভালোবাসা, সুখ দুঃখ, জটিল সম্পর্ক, রাষ্ট্র, সমাজ হয়ে উঠল সাহিত্যের বিষয়াবলী।মানুষ, ঈশ্বরের সৃষ্টি নিয়ে চিন্তাভাবনা হলো সাহিত্যের প্রধান আকর্ষণ।রেনেসাঁ সাহিত্যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদকে উৎসাহ দিয়েছিল।

পঞ্চদশ শতকের শেষ এবং ষোড়শ শতকের প্রথমার্ধ ছিল ইউরোপীয় সংস্কৃতির যুগসন্ধিক্ষণ।এই সময়ে ইউরোপীয় সাহিত্যিকরা একই সাথে ল্যাটিন ও মাতৃভাষা চর্চা করেন।তখন মূলত কাব্যই ছিল সাহিত্যের মূল রূপ।সে সময় রোমান মহাকাব্য ও চারণ কবিদের গাঁথা ছিল অন্যতম সাহিত্য নিদর্শন। 

রেনেসাঁ যুগে অনেক মানবতাবাদী কবির আবির্ভাব হয়।ইতালির দুরান্তে দেইলি আলিগিয়েরি বা দান্তে এমন একজন কবি।তাঁর ‘লা ভিতা’, ‘ইল কনভিভিও’, ‘দ্য ডিভাইন কমিডি’ সেসময়ের যুগান্তকারী রচনা। সনেটের প্রবক্তা ফ্রান্সেসকো পেত্রার্ক এর রচনা ‘লে রাইন’ ও ‘ ট্রামাস’ এ পাওয়া যায় প্রেম- প্রীতি ও ভালোবাসার সম্মেলন। ম্যাকিয়াভেলির ‘দ্য প্রিন্স’ ও ‘ডিসকোর্সেস’ মানবকেন্দ্রিকতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ। এ সময়ের নাট্য সাহিত্যও ছিল জমজমাট। জনসন ও সর্বকালের সেরা সাহিত্যিক শেক্সপিয়ার নাটক লিখে মানুষের দূর্বল দিকগুলো প্রকাশ করেছেন। ‘রোমিও জুলিয়েট’, ‘হ্যামলেট’, ‘ম্যাকবেথ’ নাটকে দেখতে পাওয়া যায় মানবজীবনের ঈপ্সিত বস্ত পাওয়া না পাওয়ার হাহাকার, প্রেম, হিংসা -বিদ্বেষ ও সম্পর্কের জটিলতা। 

রেনেসাঁ যুগের সাহিত্যের অন্যতম বড় সাফল্য ছিল ‘রোমান্টিক প্রেমের ধারণা ‘র বিস্তার।রোমান্টিকতাবাদ অবশ্য অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। কিন্তু এর বীজ বপন হয় রেনেসাঁর সময়েই। ‘রোমান্টিকতাবাদ’ বলতে শুধুমাত্র মানব- মানবীর মধ্যকার আদিম সম্পর্কের বিষয়কে বোঝায় না।এই ধারায় আবেগ ও ব্যক্তিত্ববাদ গুরুত্ব পেয়েছিল। এতে রাজনীতি, অর্থনীতি,ভৌগোলিক আবিষ্কার ও নব জাতীয়তাবাদ,বুর্জোয়াদের উত্থান ও আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। অষ্টাদশ শতকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রচলিত সাহিত্যতত্ত্ব তথা রীতির বিরুদ্ধে দ্রোহ, প্রকৃতি  প্রেম,দরিদ্র ও নিপীড়িত- শোষিত মানবাত্মার প্রতি সহানুভূতি, অতিপ্রাকৃতের প্রতি আগ্রহ ইত্যাদি এক বৃহত্তর সাহিত্য আন্দোলনের আভাস দেয় যা পরবর্তীতে ‘রোমান্টিকতাবাদ’ নামে পরিচিতি লাভ করে।সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রকৃতি, শিশু,অভব্যতা -এসবই ছিল রোমান্টিকতাবাদের আদর্শ। গ্যেটে, হোল্ডারলিন,শিলার,নোফানিস,রুশো,দিদেরো প্রমুখ রোমান্টিক কবিদের মধ্যে অন্যতম। ১৭৯৮ তে ওয়ার্ডসওয়ার্থ, এস.টি কোলরিজের লিরিকাল ব্যালাডস রোমান্টিক আন্দোলনের সাক্ষী। 

এভাবেই ঐতিহ্যবাহি দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বেরিয়ে এসে সাহিত্যের মোড়  আস্তে আস্তে ঘুরতে থাকে আধুনিক যুগের দিকে।আধুনিকতার সূচনা ও অতীতের উপসংহারের কাল রেনেসাঁর কাছে তাই আজকের শিল্প সাহিত্য অনেকটাই ঋণী।

তানজিমা বুশরা রাইয়ান
তানজিমা বুশরা রাইয়ান

Recent post