গৎবাঁধা চাকরি নয় কর্পোরেটই কি আপনার লক্ষ্য?

গৎবাঁধা চাকরি নয় কর্পোরেটই কি আপনার লক্ষ্য?

ছোটবেলায় সবাই চিন্তা করে বড় হয়ে আমি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, খেলোয়াড় শিক্ষক বা সরকারি চাকুরিজীবী হবো। কিন্তু পড়াশোনা শেষ করে চাকরি জীবনে কোন দিকটাকে নির্ধারণ করতে হবে বা কোন দিকটাকে বেছে নিবে তা নিয়ে বরাবরই থাকে দুশ্চিন্তা। কেউ কেউ গৎবাঁধা চাকরিতে প্রবেশ করে যায় তবে কারো লক্ষ্য থাকে অন্যকিছু করা। এই যেমন কর্পোরেট জগতে নিজের পরিচয় তৈরি করা কিংবা কর্পোরেট জগতে কাজ করা।

কর্পোরেট বলতে মিলিত বা যৌথ কিছুকে বুঝায়। আর কর্পোরেট জব বলতে বুঝায় কোন একটি কর্পোরেশনের সাথে সম্পর্ক বা কর্পোরেশনের অধীনে চাকরি করা। এটি অবশ্য বহুজাতিক বা বড় কোম্পানিগুলোকেও বুঝায়। বর্তমানে তরুণদের আগ্রহের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্পোরেট জব। তবে তরুণরা চিন্তায় থাকে তারা কিভাবে কর্পোরেট জবে ঢুকবে বা কিভাবে আবেদন করবে?

আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও মানুষ প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকা পড়ে থাকে। তবে এখন সেটা অনলাইনে পড়তেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে অনেকে। এই দৈনিক পত্রিকাগুলোর চাকরি পাতায় নজর দিলেই নিয়মিত বিভিন্ন কোম্পানি বা সরকারি-বেসরকারি চাকরির খবর পাওয়া যায়। এছাড়া বিডিজবস, লিঙ্কডইন এর মতো এপস তো রয়েছেই সবার ইচ্ছে অনুযায়ী বা প্রোফাইল অনুযায়ী চাকরি খোঁজার জন্য।

শুধু পত্রিকা বা এপসই নয় বিভিন্ন চাকরিমেলা থেকেও চাকরির খবর পাওয়া যায়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় বা কোম্পানিগুলোতে প্রায়শই চাকরিমেলা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। এই মেলাগুলোতেও পছন্দের কোম্পানি বা পোস্টে সিভি জবা দেওয়ার সুযোগ থাকে। এসবকিছু ছাড়া সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক তো রয়েছেই। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই বা আপু কর্পোরেট জবে রয়েছে তাদের সঙ্গে একটু ভালো সম্পর্ক থাকলে এবং প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নিলেই একটা সময় তাদের মাধ্যমেই কর্পোরেট জবে ঢুকে পড়া যায়।

কর্পোরেট জবে নিজের অবস্থানটা নিজেকেই তৈরি করতে হয়। সেখানে হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ থাকে এতে অনেক অল্প সময়ে কাজ শিখতে পারা যায়। অনেক নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে হয়। তাই মানুষকে বুঝার সক্ষমতা তৈরি করা যায়। মানুষ কি বলছে সেটা শুনে তারপর তার সঙ্গে কথা বলতে হয়। অর্থাৎ একজন ভালো শ্রোতাও হয়ে উঠা যায়। নিজের আগে অপর ব্যক্তিকে প্রাধান্য দিতে হয়। কর্মক্ষেত্রে এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন নিজের থেকে অন্যকে বেশি প্রাধান্য দিতে হয় তাই নিজের মধ্যে অন্যকে প্রাধান্য দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। যখন অন্যকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া যাবে তখন দেখা অফিসের ভিতরের ও বাইরের সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে এবং সবার বিশ্বাস অর্জন করা গিয়েছে।

কর্পোরেট জগতে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারা জরুরি। অন্যের প্রশংসা করার মানসিকতা থাকতে হবে তবে অন্যের সমালোচনা করা এড়িয়ে চলতে হবে। কোন কাজেই শেখার শেষ নেই তাই নিজের মধ্যে শেখার মানসিকতা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।

যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই বাধা আসে তবে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস রেখে এই বাধাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে পারাটাই চ্যালেঞ্জ। যারা এই চ্যালেঞ্জ পার করতে পারে তারাই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। তাই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সময় নিজেকে শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবেই প্রস্তুত করতে হয়। তবেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যায়।

 

সাজিয়া আফরিন সৃষ্টি
সাজিয়া আফরিন সৃষ্টি

Recent post