পাঁচ বছরে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ

পাঁচ বছরে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ

ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ থাকা শিক্ষার্থীদের সঠিক পথ দেখাতে কাজ করা সংগঠনগুলোর একটি হলো এক্সিলেন্স বাংলাদেশ। যাত্রার শুরু থেকে এখন অবদি দেশের প্রায় অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আস্থা হয়ে উঠেছে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ। গুটি গুটি পায়ে ৫ বছরে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ। নিজের প্রিয় প্রতিষ্ঠানের ৫ বছর পূর্তিতে এক্সিলেন্স বাংলাদেশের ক্যাম্পাস টিমের সদস্যদের অনুভূতিগুলো জানা যাক।

সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন মোঃ মাহী বিন রফিক রূপম। সাউথইস্ট বিজিনেস ইনোভেশন ফোরামে প্রোগ্রাম ডেভলপমেন্ট সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেছেন। এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সঙ্গে পথচলার অনুভূতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার যাত্রা এক্সিল্নেস বাংলাদেশের সাথে শুরু হয়েছিল ৪-৫ মাস আগে। এক্সিল্নেস বাংলাদেশের টিমের সাথে আমার সরাসরি দেখা হয়েছিল নাহিদ ভাইয়ের ক্যাম্পস BUFT এর আয়োজিত চাকরি মেলায়। আমার এই ছোট্ট পথ চলায় আমি পেয়েছি অসাধারণ চমৎকার কিছু মানুষ যারা ভিশন আন্তরিক। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেও একটি ইভেন্ট করেছিল এক্সিল্নেস বাংলাদেশ। সেই ইভেন্টে একটি চমৎকার বক্তব্য দেয়েছিলেন আমাদের প্রিয় নাইম ভাই। এক্সিল্নেস বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ অনকে বেশি আন্তরিক এবং তাদের ভালবাসা গুলোর কারণেই তারা দেশের ৭৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে তারা কাজ করে যাচ্ছে। আমার সাথে সরাসরি দেখা হয়েছে অনেক কর্পরেট মানুষের এই প্লেটফর্মের মাধ্যমে। আমি আশাবাদী যে আমাদের এক্সিল্নেস বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ বোর্ড এর সকল সদস্য ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের সর্বচ্চো আবস্থানে পৌছাবেন। বাংলাদেশের সব আমি আশাবাদী একদিন এক্সিল্নেস বাংলাদেশ হবে বাংলাদেশের সব থেকে বড় চাকরি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে দক্ষতায় পুর্ন করতে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটির গুরুত্ব অপরিসীম।’

এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সঙ্গে থেকে নিজেকে দক্ষতায় পূর্ণ করতে আহ্বান করে ইউওডা ক্যাম্পাস এম্বাসেডর মোঃ রোকন বলেন, ‘আমি অত্যন্ত গর্বের সাথে ও আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি এক্সিলেন্স বাংলাদেশ যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যেভাবে আগাচ্ছে তাতে আগামী ৫ থেকে ১০ বছর পরে পুরো বাংলাদেশ জুড়ে তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে এই সংগঠনটি।
আপনার মধ্যে যদি উপযুক্ত দক্ষতা থাকে তাহলে আপনার ভালো একটা চাকরি পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। কিন্তু আপনার মধ্যে যদি সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা না থাকে তাহলে যতই পায়ের জুতা ক্ষয় করেন না কেনো, সহজে চাকরি পাবেন না।’

বাংলাদেশ হোম ইকোনমিকস কলেজের ক্যাম্পাস টিম মেম্বার মারিয়া খানম মাঈশা নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘২০১৮ সালে বেনজির আবরার ভাইয়ের হাত ধরে শুরু হয়েছে এক্সিলেন্স বাংলাদেশের পথ চলা। ৫ থেকে ১০ জন মেম্বার নিয়ে গঠিত এই এক্সিলেন্স বাংলাদেশের পথচলা শুরু হয়েছিল এখন তা দাঁড়িয়েছে তিন হাজারের কাছাকাছি মেম্বার। বাংলাদেশের বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ। এক্সিলেন্স বাংলাদেশ হচ্ছে তরুণদের জন্য সবথেকে বড় প্লাটফর্ম যেখানে একই সাথে তারা পাচ্ছে জবফেয়ার, সেমিনার, ফেস্ট, স্কিল ডেভেলপমেন্ট,কর্পোরেট পার্সনদের সাথে কমিউনিকেশন করার সুযোগ, কমিউনিকেশন স্কিল বিল্ড আপ করার সুযোগ।বর্তমানে প্রায় বাংলাদেশে ৭০+ ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রী এর সাথে যুক্ত। প্রত্যেকটা ভার্সিটির মধ্যেই এক্সিলেন্স বাংলাদেশের নিজস্ব ৪-৫ জন মেম্বার রয়েছে। এক্সিলেন্স বাংলাদেশ তরুণদের সাথে কর্পোরেট মানুষদের সাথে যোগাযোগের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পরই ছাত্র-ছাত্রীদের মনে আশঙ্কা থাকে তারা কি করবে? কোথায় জব করবে? তাদের কি কি ডেভলপমেন্ট দরকার? কিভাবে নিজের দক্ষতা যুগের সাথে বাড়াবে,যুগের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চলতে নিজেকে আপডেট করতে হবে ইত্যাদি সকল বিষয়ের সম্পর্কে জানতে এক্সিলেন্স বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টা। বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সেমিনার, জব ফেয়ার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন সুযোগ করে দেওয়া, ক্যারিয়ার সম্পর্কে সঠিকভাবে গাইড করাই হচ্ছে এক্সিলেন্স বাংলাদেশের কাজ।’

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম এক্সিলেন্স বাংলাদেশের ক্যাম্পাস এম্বাসেডর হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হয়েছি ২০২০ সালে।আমার ক্যাম্পাসের সাবিহা বিনতি আপু আমাকে প্রথম এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সাথে পরিচয় করায় দেন। এরপর বেনজির ভাই, রিয়াজ ভাই, অনিক ভাই, রাত্রি আপু, সম্রাট ভাইসহ সবার সাথে পরিচয় হয়। তাদেরসহ এই পরিবারের সকলকে যত দেখি তত মুগ্ধ হচ্ছি তাদের মানুষের সাথে মিশে যাওয়া সবাইকে জায়গা তৈরি করে দেওয়া এই বিষয়গুলো খুব ভালো লাগে। এছাড়াও এই তিন বছরে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ থেকে সিভি রাইটিং, লিংকড-ইনে একটি ভালো প্রোফাইল তৈরীসহ অনেক সেশন ফ্রি-তে পেয়েছি যা আমার ক্যারিয়ারকে তরান্বিত করছে। এছাড়াও কর্পোরেট হেডদের সাথে নেটওয়ার্কিং করার বিশাল এক মাধ্যম হচ্ছে এই এক্সিলেন্স বাংলাদেশ। এক্সিলেন্স বাংলাদেশের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো। সামনের দিনগুলোতে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ হবে তারুণ্যের কাছে একটি বিশস্ত নাম একটি আশার আলো, এবং এক্সিলেন্স বাংলাদেশের যে সপ্ন, একটি দক্ষ তারুণ্য নির্ভর সমাজ গড়ে তোলা সেই সপ্ন একদিন পূরন হবেই ইনশাআল্লাহ। এবং এই স্বপ্ন পূরণে আমি এক্সিলেন্স বাংলাদেশের পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো। এক্সিলেন্স বাংলাদেশ তার স্বপ্নের সমান বড় হোক এই প্রত্যাশাই করি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এম্বাসাডর নাইমা সুলতানা বৃষ্টি যাত্রা শুরু করেছিলেন চবি শাখার ক্যাম্পাস টিম মেম্বার হিসেবে।
এক্সিলেন্স বাংলাদেশের মত বড় একটি প্লাটফর্মে কাজ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ৭৫ টি সরকারি-বেসরকারি ইউনিভার্সিটির টিম মেম্বারদের নিয়ে আমাদের এক্সিলেন্স বাংলাদেশ পরিবার। আমার কাছে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ বলতে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি এক্সিলেন্ট প্লাটফর্ম যেখানে একাডেমির পাশাপাশি ক্যারিয়ারের জন্য নিজেকে তৈরি ও নেটওয়ার্ক স্কিল বিল্ডআপ করে। এক্সিলেন্স বাংলাদেশের আয়োজিত জব ফেয়ার, ক্যারিয়ার ফেস্টগুলো প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের চাকুরীর সুযোগ ও নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করছে। সম্প্রতি এক্সিলেন্স বাংলাদেশের পাঁচবছর পূর্ণ হয়েছে, এই অগ্রযাত্রা শুভ হোক। নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ ঢাকার বাহিরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্যারিয়ার ফেস্ট ও নতুন আয়োজন সফল হোক এই কামনা করি। দেশের সকল শিক্ষার্থীদের নতুন সম্ভাবনায় এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এক্সিলেন্স বাংলাদেশও এগিয়ে যাক। শুভ কামনা রইল।’

এক্সিলেন্স বাংলাদেশকে নেটওয়ার্কিং এর বড় সুযোগ মনে করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এম্বাসেডর আফিয়া তাহমিন জাহিন । আফিয়া বলেন, ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত আমার মতো হাজার হাজার তারুণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। আয়োজন করছে বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের। পাশাপাশি কাজ করছে বাংলাদেশের বড় বড় কর্পোরেটের মানুষগুলোর সাথে গোটা তরুণ সমাজের একটা সুন্দর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার। এক্সিলেন্স বাংলাদেশ তরুণদের জন্য এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা কাজ করছে বর্তমানের এই চাকুরী খরা কাটিয়ে তরুণদের নতুন নতুন চাকুরির ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে। প্রতিষ্ঠানটির এই ৫ বছরে এটি এগিয়ে গিয়েছে বহুদূর এবং চোখ বন্ধ করে বলা যায় তরুণদের নিয়ে কাজ করা কর্পোরেট প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে এক্সিলেন্স বাংলাদেশ সবার থেকে দৌড়ে অনেক বেশি এগিয়ে আছে এবং ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

সাজিয়া আফরিন সৃষ্টি
সাজিয়া আফরিন সৃষ্টি

Recent post