মেডিকেল পণ্যে ব্যবসার সম্ভাবনা

মেডিকেল পণ্যে ব্যবসার সম্ভাবনা


যে কোন প্রোডাক্ট বেইজড উদ্যোগে প্রথম প্রশ্নটাই হলো সোর্সিং। আর মেডিকেল ইকুইপমেন্টে সেটা সোর্সিং প্লাস সার্ভিসও বটে। কারণ, ক্রেতা জানেনই না হয়তো কিভাবে একটা কনসেনট্রেটর কাজ করে বা কিভাবে বিপি বা সুগার মাপতে হয়। আর তাই, সোর্সিং জানার পাশাপাশি আপনাকে সার্ভিসও দিতে পারতে হবে। অন্তত, ক্রেতাদের প্রাথমিক ধারণাটুকু দিতে হবে যে, এই পণ্যটি এভাবে কাজ করে বা অমুক প্রোডাক্ট এইভাবে ব্যবহার করতে হয়।


ঘরে ঘরে থার্মোমিটার বা বিপি মেশিন। অথবা এই সময়ে এসে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর। সুগার মাপার মেশিনই বা বাদ যাবে কেন বলুন।

বলছিলাম মেডিকেল পণ্য নির্ভরতার কথা। করোনা আসার আগে হয়তো স্বল্প পরিসরে এসব পণ্যের উপস্থিতি ছিলো। আজকাল অবশ্য এসব পণ্যের সাথে যোগ হয়েছে আরো বিবিধ পণ্য। বেড়েছে এসব পণ্যের উপর নির্ভরতাও। আর তাতেই শাপে বর অবস্থা হয়েছে মেডিকেল ও সার্জিক্যাল পণ্য ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের। একটু চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো, কত ধরনের মেডিকেল প্রোডাক্ট আছে যা আপনার নিত্য অনুষঙ্গ। আর এই অনুষঙ্গগুলোই আপনাকে করতে পারে সফল উদ্যোক্তাও।

প্রশ্ন আসতে পারে, কিভাবে কি করবেন! কোথা থেকে করবেন সোর্সিং। ক্রেতাদের কাছেই বা কিভাবে পৌঁছোবেন?


যে কোন প্রোডাক্ট বেইজড উদ্যোগে প্রথম প্রশ্নটাই হলো সোর্সিং। আর মেডিকেল ইকুইপমেন্টে সেটা সোর্সিং প্লাস সার্ভিসও বটে। কারণ, ক্রেতা জানেনই না হয়তো কিভাবে একটা কনসেনট্রেটর কাজ করে বা কিভাবে বিপি বা সুগার মাপতে হয়। আর তাই, সোর্সিং জানার পাশাপাশি আপনাকে সার্ভিসও দিতে পারতে হবে। অন্তত, ক্রেতাদের প্রাথমিক ধারণাটুকু দিতে হবে যে, এই পণ্যটি এভাবে কাজ করে বা অমুক প্রোডাক্ট এইভাবে ব্যবহার করতে হয়।

তবে, কর্পোরেট ক্লায়েন্ট পেলে হয়তো এসব ঝামেলা কমে। তবে ক্রেতা তো ক্রেতাই, সে কর্পোরেট হোক বা ব্যক্তি।

যা বলছিলাম, সোর্সিং। আমাজন বা আলিবাবার কথা শুরুতেই আসবে। আপনি এই জগতে নতুন হলে নিশ্চয়ই চায়না ক্যান্টন ফেয়ারে যেতে পারবেন না শুরুতেই। আপনাকে অবশ্যই ভার্চুয়াল ক্যান্টন ফেয়ারের সহায়তা নিতে হবে। সেই ভার্চুয়াল ফেয়ারটা আলীবাবাও হতে পারে। সাইটে গেলেই দেখবেন হাজারো পণ্যের পসরা। বিভিন্ন বিজনেস গ্রুপের সহায়তাও নিতে পারেন কিভাবে প্রোডাক্ট বাছাই করবেন। পণ্যের লট অনুযায়ী দাম নির্ধারন করা থাকে। আপনি নিজে কিছুদিন সময় দিলেই বুঝবেন কি করণীয়।

যত সহজে বললাম অত সহজ হয়তো নয়, তবে কোন রকেট সায়েন্সও না এসব জিনিস। দেশে যারাই উদ্যোক্তা হয়েছেন সবার কর্মপন্থা এটাই ছিলো। মজার ও স্বস্তির খবর, দেশীয় অনেক প্লাটফর্মও এখন এসব কাজে সিদ্ধহস্ত বলতে গেলে। আপনার সোর্সিং এর ভার আপনি নিশ্চিন্তে এসব প্লাটফর্মের ওপর ছেড়ে দিতে পারেন। দেশে যেমন মেডিস্টোর, কিউরা হেল্থ গ্রুপসহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এসব মেডিকেল পণ্যের উদ্যোগ নিয়ে। আপনি এসব জায়গা থেকে সহজেই মেডিকেল পণ্যের সোর্সিং করতে পারেন। একটা তথ্য আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, গত ২০২০ এ দুনিয়াজোড়া সবচেয়ে বিক্রিত পণ্যটি হলো সার্জিক্যাল মাস্ক। এ তো গেলো একটা পণ্যের হিসাব, নেবুলাইজার, স্যানিটাইজার সহ আরো বিবিধ পণ্যের রমরমা ব্যবসা ছিলো চোখে পড়ার মত।

রমরমা শব্দটি হয়তো শুনতে খারাপ, কিন্তু বাস্তবতা হলো পুরো বিশ্বের নজর এখন স্বাস্থ্যখাতে। সেটা জনবল কেন্দ্রীক হোক বা পণ্য কেন্দ্রীক হোক। এক বাংলাদেশ বা ভারতে অক্সিজেন সংকট কি তীব্র আকার ধারণ করেছিলো নিশ্চয়ই জানেন। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ এই খাতে আসবে এটা সংশ্লিষ্টরাই বলছেন। চ্যালেঞ্জ সম্ভাবনা নিয়েই আসে, সেটা বলতে হয় না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এদেশের জনসংখ্যা ও তার অনুপাতে উদ্যোগের সংখ্যা। জনসংখ্যা চ্যালেঞ্জ হলে সেটা কিন্তু সম্ভাবনাও। আপনি শুরুতেই কাজ করবেন ১৮০ মিলিয়ন লোককে আপনার ক্রেতা ভেবে। এটাই সম্ভাবনা।


আপনি হয়তো জানেন না, দেশে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা কত। কিন্তু জানেন যে, আপনার সামান্য জ্বর হলেও এখন ঐখানেই দৌড়াতে হয়। এই সেক্টরের আরেকটা ব্যাপার, অনলাইনে এখনও এই সেক্টর নাসসেন্ট স্টেজেই আছে। তাই শুরু করাটাই আপাত চ্যালেঞ্জ। ভাবছেন, মূলধন কত লাগবে এই তো? আপনার রিসার্চের ওপরই এটা নির্ভর করছে কিন্তু। শুধু মাস্ক বিক্রি হয়তো কোন উদ্যোগ নয়। বা আপনি যদি ভাবেন পণ্যের সাথে সেবাও আপনার মুল জিনিস হবে আপনি ঐদিকেও ফোকাস রাখতে পারেন। নিজের এলাকাতেও পাইলট আকারে শুরু করতে পারেন। যোগাযোগ বাড়াতে পারেন অনলাইন হেল্প লাইন গ্রুপগুলোতে। মুলধনের চেয়ে সময় বিনিয়োগই হতে পারে আপনার মুল পয়েন্ট। অনলাইন, অফলাইন প্রচারণা আপনার চাবিকাঠি হতে পারে। একটা তথ্য দিয়ে শেষ করি, এদেশে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট এর বাজার বাৎসরিক ৫০ হাজার কোটি টাকার কিন্তু! যেটা প্রতিবছরই প্রবৃদ্ধি লাভ করছে। এবার আপনিই বুঝবেন সেই বাজারে আপনি কিভাবে হিস্যা নিবেন।

লেখা-

কামরুল হাসান
ফাউন্ডার এন্ড সিইও
মেডিস্টোর বিডি

এক্সিলেন্স বাংলাদেশ ব্লগ ডেস্ক
এক্সিলেন্স বাংলাদেশ ব্লগ ডেস্ক

Recent post